নিজস্ব প্রতিবেদক

বেঙ্গল নিউজ টোয়েন্টিফোর


২৯ মে ২০২২ ০৩:৪৩



বায়ুদূষণ বেশি শাহবাগে, শব্দদূষণ গুলশানে

নিজস্ব প্রতিবেদক, বেঙ্গলনিউজ টোয়েন্টিফোর

২৯ মে ২০২২ ০৩:৪৩

বায়ুদূষণ বেশি শাহবাগে, শব্দদূষণ গুলশানে

প্রতীকী ছবি

ঢাকার বায়ুদূষণ ও শব্দ দূষণ নিয়ে নতুন তথ্য দিল বেসরকারি স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)। তাদের গবেষণা বলছে,  ঢাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণ হয় শাহবাগ এলাকায়। আর শব্দদূষণে শীর্ষে রয়েছে গুলশান-২ এলাকা। রবিবার (২৯ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরে ক্যাপস।

প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, গবেষণাটি ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এক বছরের মধ্যে করা হয়েছে। এতে ঢাকার আহসান মঞ্জিল, আব্দুল্লাহপুর, মতিঝিল, শাহবাগ, ধানমন্ডি-৩২, সংসদ এলাকা, তেজগাঁও, আগারগাঁও, মিরপুর-১০ ও গুলশান-২-এর বায়ু ও শব্দমানের তথ্য-উপাত্ত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানানো হয়।

ইউএসএআইডির অর্থায়নে ‘ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশ’, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ এবং বেসরকারি স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে এ গবেষণা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ক্যাপসের চেয়ারম্যান ও স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, বায়ুমান সূচক অনুযায়ী ঢাকা শহরের ১০টি স্থানের অবস্থা ‘অস্বাস্থ্যকর’। এসব স্থানে বস্তুকণা ২.৫ পিএম এর গড় বার্ষিক উপস্থিতি প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে ৭৭ মাইক্রোগ্রাম, যা আদর্শ মানের (১৫ মাইক্রোগ্রাম) চেয়ে ৫.১ গুণ বেশি। এছাড়া বস্তুকণা পিএম ১০ এর গড় বার্ষিক উপস্থিতি প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে ১০৫ মাইক্রোগ্রাম, যা বার্ষিক আদর্শ মানের (৫০ মাইক্রোগ্রাম) চেয়ে গড়ে ২.১ গুণ বেশি।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ১০টি স্থানের মধ্যে সর্বোচ্চ বায়ুদূষণ শাহবাগ এলাকায়, সেখানে পিএম ২.৫-এর গড় উপস্থিতি প্রতি ঘনমিটারে ৮৫ মাইক্রোগ্রাম। অর্থাৎ আদর্শ মান থেকে ৫.৬ গুণ বেশি এবং সর্বনিম্ন বায়ুদূষণ জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায়। সেখানে পিএম ২.৫-এর গড় উপস্থিতি প্রতি ঘনমিটারে ৭০ গ্রাম। অর্থাৎ আদর্শ মান থেকে ৪.৬ গুণ বেশি।

অন্যদিকে শব্দদূষণের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা শহরের ১০টি এলাকার মধ্যে গুলশান-২ এলাকায় শব্দের সর্বোচ্চ মান এলইকিউ ৯৫.৪৪ ডেসিবল, যা মিশ্র এলাকার জন্য দিনের বেলার জাতীয় আদর্শ মান (৫৫ ডেসিবল) থেকে ১.৭ গুণ বেশি। এরপরের অবস্থানে আছে আব্দুল্লাহপুর, ৯৫.৪৩ ডেসিবল, যা জাতীয় আদর্শ মানের (৬০ ডেসিবল) থেকে ১.৬ গুণ বেশি। অন্যদিকে তেজগাঁও এলাকার সর্বনিম্ন এলইকিউ মান ছিল ৮৯ ডেসিবল, যা জাতীয় আদর্শ মান (৭৫) থেকে ১.১ গুণ বেশি। গবেষণাধীন আওতার মধ্যে সর্বাধিক ১৩২ ডেসিবল শব্দ রেকর্ড করা হয়েছে গুলশান-২ এলাকায় এবং সর্বনিম্ন শব্দ রেকর্ড হয়েছে সংসদ এলাকায় ৩১.৭ ডেসিবল।

সংবাদ সম্মেলনে শব্দ ও বায়ুদূষণরোধে ক্যাপস কিছু দাবি জানায়। এর মধ্যে রয়েছে- বায়ুদূষণরোধে ঢাকা শহরের সব নির্মাণ প্রকল্পে নির্মাণবিধি মেনে সুষ্ঠু ব্যস্তবায়ন ও নিয়মিত তদারকি নিশ্চিত করতে হবে; বায়ুদূষণরোধে হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা এবং অমান্যকারীদের আইনের আওতায় আনা; খসড়া ‘নির্মল বায়ু আইন ২০১৯’ অধিকতর সুস্পষ্ট করে চূড়ান্ত করা এবং তা বাস্তবায়ন করা ইত্যাদি।

সংবাদ সম্মেলনে ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নূরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ডিডি/কেএ