ডেস্ক রিপোর্ট

বেঙ্গল নিউজ টোয়েন্টিফোর


১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:১২



ভারত–কানাডার সম্পর্কের টানাপোড়েন
কে এই শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর?

ডেস্ক রিপোর্ট, বেঙ্গলনিউজ টোয়েন্টিফোর

১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:১২

কে এই শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর?

ছবিঃ সংগৃহীত

চলতি বছরের জুনে কানাডায় খুন হন নির্বাসিত ভারতীয় শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর। এই খুনের পেছনে ভারত সরকার জড়িত এমনটাই অভিযোগ কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর। এ হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র কানাডার সঙ্গে ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক হঠাৎই তলানিতে। প্রশ্ন হলো—কে এই হরদীপ সিং নিজ্জর, যার হত্যাকাণ্ড ঘিরে দুই দেশের সম্পর্কে এমন অবনতি?

কে এই হরদীপ সিং নিজ্জর?

ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের জলন্ধরের ভার সিং পুরা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন হরদীপ সিং নিজ্জর। ওই গ্রামেই জন্ম তাঁর। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে কানাডায় বসবাস করতেন তিনি। পাঞ্জাব থেকে ১৯৯৭ সালে তিনি কানাডায় পাড়ি জমান।

দুই সন্তানের জনক নিজ্জার একজন সাধারণ প্লাম্বার (পাইপ মিস্ত্রি) হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলেও কানাডায় পাড়ি জমানোর পর যোগ দেন খালিস্তান আন্দোলনে। তিনি ছিলেন খালিস্তান টাইগার ফোর্সের (কেটিএফ) প্রধান "মাস্টারমাইন্ড"। কেটিএফ'কে দিল্লি একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসাবে বিবেচনা করে থাকে। এছাড়াও তিনি আরেক নিষিদ্ধ সংগঠন শিখস ফর জাস্টিসেও (এসএফজে) যুক্ত ছিলেন। সবশেষ ২০২০ সালে তাকে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ সন্ত্রাসী ঘোষণা করে ভারত।

নাগরিকদের গুপ্তচরবৃত্তির আহ্বান জানাচ্ছেন শি জিনপিংনাগরিকদের গুপ্তচরবৃত্তির আহ্বান জানাচ্ছেন শি জিনপিং ২০০৭ সালে পাঞ্জাবের লুধিয়ানায় এক বিস্ফোরণে ছয়জন নিহত এবং প্রায় ৪০ জন আহত হওয়ার মামলাসহ আরও একাধিক মামলায় তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করা হয়। এছাড়াও রাষ্ট্রীয় শিখ সংগঠনের সভাপতি রুলদা সিং (পাতিয়ালা, ২০০৯) হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন তিনি।

গেলো জুলাইয়ে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) পাঞ্জাবের জলন্ধরে একজন হিন্দু পুরোহিতকে হত্যার দায়ে নিজ্জারের ধরিয়ে দিতে ১০ লাখ রুপির নগদ পুরস্কার ঘোষণা করে। এছাড়া কানাডা, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় কূটনৈতিক মিশনে সাম্প্রতিক হামলার জন্য অন্যান্য নেতাদের পাশাপাশি তাকে দায়ী করা হয়।

খালিস্তান আন্দোলন

‘খালিস্তান’ দক্ষিণ এশিয়ার পাঞ্জাব অঞ্চলে জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত একটি স্বতন্ত্র ও সার্বভৌম দেশ। প্রস্তাবিত রাষ্ট্রকে ভূখণ্ডগতভাবে ভারতীয় পাঞ্জাব রাজ্য থেকে শুরু করে বৃহত্তর পাঞ্জাব অঞ্চল পর্যন্ত অথবা প্রতিবেশী ভারতীয় রাজ্যসমূহকেও অন্তর্ভুক্ত করে সংজ্ঞায়িত করা হয়। পাঞ্জাব অঞ্চল শিখদের ঐতিহ্যগত মাতৃভূমি। ইংরেজ দ্বারা অধিকৃত হওয়ার আগে পাঞ্জাব শিখদের দ্বারা ৮২ বছর শাসিত হয়; ১৭৬৭ থেকে ১৭৯৯ সাল পর্যন্ত সমগ্র পাঞ্জাব শিখ মিসল (সার্বভৌম শিখ রাষ্ট্র) সমূহের অধীন ছিল, তারপর মহারাজা রণজিৎ সিং শিখ মৈত্রী সঙ্ঘকে শিখ সাম্রাজ্যের মাঝে একীভূত করেন।

সেখানে শিখদের পাশাপাশি অনেক হিন্দু ও মুসলিমও বসবাস করতো। ১৯৪৭ সালের আগে শিখরা ব্রিটিশ অখণ্ড পাঞ্জাব রাজ্যের শুধু লুধিয়ানা জেলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল। ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাবের মাধ্যমে মুসলিম লীগ যখন মুসলিমদের জন্য একটি আলাদা রাষ্ট্রের দাবি জানায়, তখন কিছু শিখ নেতা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন যে, হিন্দু ও মুসলিমের ভিত্তিতে ভারত বিভাজিত করলে শিখ সম্প্রদায়ের কোনো স্বাধীন মাতৃভূমি থাকবে না। তারা তখন বৃহত্তর পাঞ্জাব অঞ্চলে বিস্তৃত খালিস্তান নামক একটি ধর্মরাষ্ট্র সৃষ্টির ধারণা পেশ করেন। তখন থেকে এই আন্দোলনের সূত্রপাত।/এসবি