নিজস্ব প্রতিবেদক, বেঙ্গলনিউজ টোয়েন্টিফোর
১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৪৪
ছবি: সংগৃহিত
এনজিও ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র করছে। এমন মন্তব্য করেছেন সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি আজ শনিবার এক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, 'গত পাঁচ মাসে অবৈধভাবে ক্ষমতাদখলকারী ইউনূস সরকার সকল ক্ষেত্রে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই বঙ্গবন্ধু পরিবার নিয়ে মিথ্যাচার করছে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়েছে ইউনূস সরকার। কিন্তু কোনো সংবাদমাধ্যমে তারা সংবাদ প্রকাশ করতে দেয়নি। বাংলাদেশের সকল সংবাদমাধ্যমের ওপর এক অদৃশ্য নিয়ন্ত্রণ চালাচ্ছে এই অবৈধ দখলদারবাহিনী। তারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলে, আবার মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে কোনো ধরণের সংবাদ প্রচারে সরাসরি বাধা প্রদান করে দ্বিচারিতার রাজনীতি করছে। এর মাঝেই বাংলাদেশের শেয়ার বাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকার মূলধন হারিয়ে গেছে। এসব ব্যাপারে কোনো যৌক্তিক ব্যাখা দিতে পারেনি ইউনূস সরকার। শুধু তাই নয়, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ জনগণের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। এই অবৈধ দখলদার সরকার কোনোভাবেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। অন্যদিকে অধ্যাপক ইউনূস তার নিজস্ব একটি প্রতিষ্ঠানের ৬৬৬ কোটি টাকার কর মওকুফ করিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু এরা সাধারণ জনগণের ১০০টির ওপরে ভোগ্যপণ্যের ওপর বাড়তি কর আরোপ করেছে। বিশ্বব্যাংক ইতিমধ্যেই এ বছর দেশের মূল্যস্ফীতি বাড়ার এবং ভোগ্যপণের দাম বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছে।
মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, 'সাধারণ জনগণকে নিরাপত্তা প্রদানে ব্যার্থতাসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে এই ইউনূস সরকার ব্যর্থ হয়ে কিছু অপকৌশল গ্রহণ করেছে। সাধারণ জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে ঘোরাতে তারা বাংলাদেশের দুর্নীতি কমিশন দিয়ে বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিয়ে মিথ্যাচার করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়েও তারা মিথ্যাচার করছে। তারা এফবিআই এর নাম দিয়ে একটি মিথ্যা সংবাদ প্রচার করালো। সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের মিথ্যা অভিযোগ আনলো। কিন্তু এফবিআই থেকে এ ধরনের কোনো তথ্যের সন্ধান পাওয়া যায়নি।'
মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, 'ইংল্যান্ডের লেবার পার্টির নেতা টিউলিপ সিদ্দিকীকে নিয়ে ইউনূস প্রশাসন সম্প্রতি একটি মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেছে। বাংলাদেশের সরকার বা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু তিনি বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য হওয়ায় তার নামে এই মিথ্যাচার করছে ইউনূস সরকার। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযোগ করছে, টিউলিপ সিদ্দিকী নাকি রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশের যে নিউক্লিয়ার চুক্তি হয়েছে সেখানে ৫ মিলিয়ন ডলার দুর্নীতি করা হয়েছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোথাও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প নামক একটি প্রতিষ্ঠান টিউলিপের ব্যাপারে প্রথম এই অভিযোগটি আনে। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানটির কোনো অস্তিত্ব এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ এই প্রতিষ্ঠানটিকে উদৃত করে বাংলাদেশের অধিকাংশ গণমাধ্যম দিয়ে এই মিথ্যা সংবাদটি প্রচার করিয়েছে ইউনূস সরকার। এই ইউনূস সরকারই আবার তাদের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান দিয়ে এই দুর্নীতির তদন্ত করিয়েছে। এই কারণেই মূলত ইংল্যান্ডের কয়েকটি গণমাধ্যমে বিষয়টি উঠে এসেছে। কিন্তু টিউলিপ সিদ্দিকী কিন্তু দুর্নীতির দায়ে পদত্যাগ করেননি। তিনি তার পদত্যাগপত্রে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেছেন, তার বিরুদ্ধে আনিত দুর্নীতির সকল অভিযোগ মিথ্যা এবং পরিচ্ছন্নভাবে কাজ করার জন্য তিনি মন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করছেন।
মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, 'ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টার মার্ক টিউলিপ সিদ্দিকীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে প্রত্যুত্তরে একটি পত্রে জানিয়েছেন, টিউলিপ সিদ্দিকীর এই বিষয় নিয়ে স্যার ম্যাগনাস নামক এক স্বাধীন উপদেষ্টা তদন্ত করেছে। তদন্ত প্রতিবেদনে তিনি জানিয়েছেন, টিউলিপের বিষয়ে কোনো ধরণের অসঙ্গতি পাওয়া যায়নি। সুতরাং টিউলিপ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগের ব্যাপারে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী পরিষ্কারভাবে উত্তর দিয়েছেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিকীকে নিয়ে স্বাধীনভাবে তদন্ত হয়েছে। সুতরাং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি তথ্যভাণ্ডারে যে চিঠিটি নথিভুক্ত হয়েছে, সেখানে টিউলিপের বিষয়ে কোনো অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। মূলত অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ইউনূস প্রশাসন আওয়ামী লীগ এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করছে।'