বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের হাল ধরছেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। তাঁকেই দলের পরবর্তী সভাপতি করা হচ্ছে। গতকাল ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। দলীয় একটি সূত্র বেঙ্গল নিউজ টোয়েন্টিফোরকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

একাধিক সূত্রমতে, দলের নেতৃত্ব ঠিক করার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানাসহ শেখ পরিবারের ঘনিষ্ঠ কয়েকজনকে নিয়ে বৈঠক করেন। তার আগে বিভিন্ন সময়ে তিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করেন। বিভিন্ন সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায়ও শেখ হাসিনা দলের নেতৃত্ব ঠিক করার বিষয়ে ধারণা নেন। সব মিলিয়ে গতকাল তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে সজীব ওয়াজেদ জয়কে দায়িত্ব দেবেন বলে জানান।

শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ওই সূত্রটি জানায়, দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মেধাবী ও দক্ষ একজন তরুন নেতা খোঁজা হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই দলের নতুন নেতৃত্ব দেখা যাবে। দলের দুর্দিনে নতুন নেতৃত্ব যেন ভালভাবে কাজ করতে পারেন সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ দুই নেতাকে ফান্ড গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

গত বছরের ৫ আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ। এর আগে টানা ১৬ বছর ক্ষমতায় ছিল দলটি। বর্তমানে বাংলাদেশে দলটির কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ আছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে ছিল আওয়ামী লীগ। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ভারতে অবস্থানরত বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এরপর তিনি দেশে ফিরে দলকে সুসংগঠিত করেন। তার নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় যায়। গত ৪৪ বছর ধরে শেখ হাসিনাই আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে আছেন। বর্তমানে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন। দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই ভারতে আছেন বলে আলোচনা রয়েছে।

গত বছরের আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপরে চরম জুলুম নির্যাতন নেমে এসেছে। দলটির সাংগঠনিক অবস্থা খুবই শোচনীয়। গত বছরেও দলটির নেতাকর্মীরা সংগঠিত হতে পারেনি। এমন অবস্থায় দলকে নতুনভাবে সুসংগঠিত করতে সজীব ওয়াজেদ জয়কে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। 

একাধিক সূত্র বেঙ্গল নিউজ টোয়েন্টিফোরকে জানায়, নতুন কমিটিতে বেশ কয়েকজন তরুন নেতৃত্বকে স্থান দেওয়া হবে। তবে পুরনো দক্ষ নেতাদের অনেকেই কমিটিতে স্থান পাবেন।