কনটেন্ট ক্রিয়েটর

বেঙ্গল নিউজ টোয়েন্টিফোর


০৩ আগস্ট ২০২২ ০৪:৪০



মরুসংগীত!

কনটেন্ট ক্রিয়েটর, বেঙ্গলনিউজ টোয়েন্টিফোর

০৩ আগস্ট ২০২২ ০৪:৪০

মরুসংগীত!

মরুর ঢেউ। ছবি, এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা


আমরা মৌমাছির গুঞ্জন শুনেছি। আবার গ্রেগরিয়ান মন্ত্রের কোরাস শুনেছি। কিন্তু শ্যামল দেশের মানুষ আমরা কি হাজার বছর ধরে মরুর বুকে বেজে চলা বালুর ঢেউয়ের শব্দ শুনেছি? সবাই না বোধহয়।

এখানে শুনতেপারি

অবিশ্বাস্য মনে হলেও আপনার কান যা শুনেছে তা সত্যি। বালির ঢেউয়ের এই শব্দের পেছনের কারণ নিয়ে বিজ্ঞান গত কয়েক দশক ধরে গবেষণা করছে।

বালু অত্যন্ত রহস্যময়। এর তল মসৃণ, আকৃতি সূক্ষ্ম। যখন সমষ্টি হয়ে থাকে, মসৃণতার কারণে বালু তরলের মতো প্রবাহিত হতে পারে। যখন মাটিতে বুকে হেঁটে বেড়ায়, তখন কঠিনের মতো আচরণ করে। যখন বাতাসে ওড়ে, তখন গ্যাসীয় কণার মতো বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে।

কথাগুলো বলেছেন, ড. নাথালি ভ্রিন্ড। তিনি কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়্যাল সোসাইটি ইউনিভার্সিটির একজন রিসার্চ ফেলো।  ‍

দানাদার বস্তুর প্রবাহ নিয়ে পদার্থবিজ্ঞানে এখনো পর্যাপ্ত গবেষণা হয়নি বলে মনে করা হয়। মরুভূমিতে দানাদার বালুর সমুদ্রে এই সংগীতের উৎপত্তি। সুতরাং এর জন্ম নিয়ে বৈজ্ঞানিক নিশ্চিত কোনো উপসংহারে এখনো আসা যাচ্ছে না। এ যাবতকালের গবেষণায় হয়ত খানিক আয়ত্বে এসেছে কার্যকারণ।

বলা হচ্ছে, বাতাস যখন বালুন কণাকে ঠেলে নিতে থাকে, তখন সব কণা একই দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে না। এবং পূর্ববর্তী কণা পরবর্তী কণাকে আটকে রাখে। এভাবে প্রাকৃতিক নিয়মে প্রায় নিয়মিত বিরতিতে ছোট ছোট ঢেউয়ের মতো তৈরি হয়। এই ঢেউ- হতে পারে সাগরের বেলাভূমিতে জলের দাগের মতো ক্ষুদ্র, আবার রাঙামাটির পাহাড় শ্রেণির মতো বিরাট। মরুভূতিতে এমন ঢেউ সারাক্ষণ এপাশ ওপাশ করছে।

মরুর এই মরুসংগীত নিয়ে ভাবছেন এমন আরো একজন, ড. মেলানি হান্ট। ক্যালটেক বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশলের অধ্যাপক। তিনি মনে করেন, উত্তপ্ত বাতাস যখন মরুর ওপর দিয়ে যেতে থাকে, বালুর সমান্তরাল ঢেউগুলো বাদ্যযন্ত্রের তারের মতো আচরণ করতে পারে। যেন গিটার বা চেলোর সমান্তরাল তার যারা বাদকের জন্য অপেক্ষা করছে। মরুভূমিতে সেই বাদক হলো হাওয়া।

তবে শব্দ ওঠার জন্যে বালুর ঢেউগুলোকে পর্যাপ্ত উঁচু হতে হয়। তাহলে সমান্তরাল ঢেউ, ঢেউয়ের বালু, ঢালের গভীরতা এক বিপুল বাদ্যযন্ত্রের পরিবেশ তৈরি করতেও পারে।

ক্যালিফোর্নিয়া, আফ্রিকা, চীন ও কাতার থেকে শুরু করে বিশ্বজুড়ে কমপক্ষে ৩৫টি মরুভূমিতে বালির ঢেউয়ের এমন গম্ভীর ধ্বনি শোনা যায়। কখনো সখনো এ ধ্বনি রীতিমতো সুর তৈরি করে। একে মরুসংগীত বললে হয়ত বাড়িয়ে বলা হয় না।   

সূত্র : Treehugger

কৃতজ্ঞতা : PBS Terra, YouTube (What makes these dune sing)

জেডএস/এইচকে