কনটেন্ট ক্রিয়েটর, বেঙ্গলনিউজ টোয়েন্টিফোর
২২ মে ২০২২ ১২:২২
প্রতীকী ছবি
‘অনকোলাইটিক’ এমন একটা ভাইরাস,
যেটা মূলত ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এ ক্ষেত্রে ‘অনকো’ অর্থ ক্যান্সার; আর ‘লাইটিক’
অর্থ ধ্বংস বা বিনাশ করা । অনকোলাইটিক ভাইরাস ক্যান্সারে আক্রান্ত কোষের ভেতরে প্রবেশ
করে বংশবৃদ্ধি করতে থাকে এবং এক পর্যায়ে গিয়ে ক্যান্সার কোষকে ধ্বংস করে। আর এই প্রক্রিয়াকে
বিজ্ঞানীরা বলছেন ‘অনকোলাইসিস'।
এই পদ্ধতিতে ক্যান্সার চিকিৎসার
ধারণা অবশ্য নতুন নয়। অন্তত
১০০ বছর আগে থেকে বিজ্ঞানীরা এই প্রক্রিয়া
পর্যবেক্ষণ করছেন। দেখা গেছে, যেসব ক্যান্সার রোগীর দেহে ভাইরাসের প্রবল সংক্রমণ ঘটে,
তাদের ক্যান্সার কোষগুলোর বিস্তার বন্ধ হয়ে যায় এবং টিউমার ছোট হতে থাকে। এমনকি কয়েকজন
রোগীর ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ক্যান্সার কোষ পুরোপুরি নির্মূল হয়েছে।
কানাডার ডালহৌসি বিশ্ববিদ্যালয়ের
মাইক্রোবায়োলজি ও ইমিউনলজি বিভাগের অধ্যাপক প্যাট্রিক লি টেড টকসে এক বক্তৃতায় বলেছিলেন,
‘বর্তমানে ক্যান্সারের অস্ত্রোপচার, রেডিয়েশন থেরাপি ও কেমোথেরাপি মতো চিকিৎসা
রয়েছে। নতুন করে যোগ হয়েছে হরমোন থেরাপি ও ইমিউন থেরাপি। অস্ত্রোপচারে কিছু সমস্যা
আছে। যেমন অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ক্যান্সার সমূলে উৎপাটন করা যায় না এবং অনেক সময় তা
ফিরে আসে। অন্যদিকে রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপির অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এ ধরণের
চিকিৎসার মূল সমস্যা হলো, ক্যান্সার কোষের পাশাপাশি সুস্থ কোষও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’
টকসে আরও বলেন, ‘অনকোলাইটিক ভাইরাস
ব্যবহারে এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। এসব ভাইরাসের মূল সুবিধা হলো,
এরা শুধুমাত্র ক্যান্সার কোষকেই আক্রমণ করে। আরেকটি সুবিধা হলো জেনেটিক
ইঞ্জিনিয়ারিং বা জিনগত প্রকৌশলের মাধ্যমে এসব ভাইরাসকে পরিবর্তন করা যায়। ফলে ভাইরাসটি
সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অনুযায়ী কাজ করতে পারে। এসব ভাইরাসকে খুব সহজেই ল্যাবে জন্মানো
যায়। ফলে এরা খুব সহজলভ্য।’
অনকোলাইটিক ভাইরাস দুটি উপায়ে
ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করে। একটা হলো সরাসরিভাবে; আরেকটি হলো দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে
সজাগ করার মাধ্যমে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে (লাইটিক সাইকেল প্রক্রিয়ায়) ভাইরাস সাধারণ কোষকে
ধ্বংস করতে পারে। ভাইরাসের এই বৈশিষ্ট্য কাজে লাগিয়ে টিউমার কোষকে ধ্বংস করা যায়,
জীববিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় ‘অনকোলাইটিক ভাইরাল থেরাপি’।
সূত্র : ডয়চে ভেলে, বিবিসি
ইউএইচ/এএল