সাতক্ষীরা সংবাদদাতা

বেঙ্গল নিউজ টোয়েন্টিফোর


২২ অক্টোবর ২০২২ ০৮:১৮



জমে উঠেছে সাতক্ষীরার গুড়পুকুরের মেলা

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা, বেঙ্গলনিউজ টোয়েন্টিফোর

২২ অক্টোবর ২০২২ ০৮:১৮

জমে উঠেছে সাতক্ষীরার গুড়পুকুরের মেলা

ছবি-সাতক্ষীরা সংবাদদাতা

শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে সাতক্ষীরার ৪০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী গুড়পুকুরের মেলা। শহরের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে দেড় মাসব্যাপী এ মেলার আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন ও সাতক্ষীরা পৌরসভা।

শুক্রবার ও শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় মেলায় ছিল হাজার হাজার দর্শনার্থী। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার তাদের বেচা-বিক্রি বেশি হয়েছে।  মেলা চলাকালীন দুর্গা পূজা হওয়ায় এবার তাদের তাদের বিক্রি বেশ ভালো হয়েছে।

জানা যায়, জেলা প্রশাসন ও পৌরসভার যৌথ আয়োজনে মেলা শুরু হয়েছে গত ২০ সেপ্টেম্বর। এবারের মেলায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা চার শতাধিক স্টল রয়েছে। দর্শনার্থীদের আগমন বাড়ায় মেলায় পোশাক, কসমমেটিকস, খেলনা ও আসবাবসহ বিভিন্ন পণ্যের বিকিকিনি ভালোই হচ্ছে বলে জানান দোকানিরা। আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার সময়সীমা ১৫ দিন হলেও এবার দেড় মাসব্যাপী চলবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। 

মেলায় বাচ্চাদের জন্য রয়েছে নাগর দোলা, ম্যাজিক বোট, ট্রেন ও দোলনাসহ নানা ধরনের খেলনা।

সাতক্ষীরা পৌরসভার রাজার বাগান এলাকা থেকে বাবা মায়ের সাথে মেলায় আসা শিশু মেহজাবিন জারা জানায়, মেলায় এসে খুব ভালো লাগছে। সে নাগরদোলা চড়েছে। তার বাবা অনেক খেলনা কিনে দিয়েছে।

নুর রিকো নামে এক দর্শনার্থী  বলেন, ‘গুড়পুকুরের মেলা সাতক্ষীরার ঐতিহ্য। নানা ব্যস্ততার মধ্যেও সেই ঢাকা থেকে শুধু মেলা উপলক্ষেই বাড়ি এসেছি। খুব ভাল লাগছে।’

হোসেন বিগ বাজারের সত্ত্বাধীকারী হোসেন আলী জানান, আমি প্রতিবছর গুড় পুকুরের মেলায় দোকান দিয়ে থাকি। করোনার কারণে বিগত দুই বছর মেলা বন্ধ ছিল। এবছর আবারও মেলা শুরু হয়েছে। বিগত কয়েক  বছরের তুলনায় এবার বেচাকেনাও ভালো হয়েছে।

ঢাকা থেকে আসা ঢাকা দই ফুসকা চিকেন হাউসের ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথম দিকে বেচাকেনা ভালো হয়নি। শেষের দিকে বেচা-বিক্রি বেড়েছে।’

যশোর থেকে আসা ব্যবসায়ী গোলাম রসুল বলেন, ‘এই মেলায় এবার প্রথম এসেছি। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গা পূজার কারণে কেনাবেচা অনেক ভালো হয়েছে।’

সাতক্ষীরা পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও মেলা সমন্বয়ক কাজী ফিরোজ হাসান বলেন, ‘করোনা মহামারীর কারণে দুই বছর মেলা বন্ধ ছিল। ২০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে আগামী ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত। প্রতিবছর ভাদ্রের শেষ দিকে মনসা পূজা উপলক্ষে গুড়পুকুরের মেলা বসলেও তা পরিণত হয় সব ধর্মের মানুষের মিলন মেলায়। আস্তে আস্তে মেলা তার পূর্বের রূপ ফিরে পাচ্ছে বলে তিনি জানান । 

প্রসঙ্গত, মনসা ও বিশ্বকর্মা পূজা উপলক্ষে দীর্ঘদিন ধরে বাংলা পঞ্জিকার ভাদ্র মাসের শেষ দিকে এ মেলার আয়োজন করা হয়। আগে মেলা বসত পলাশপোলের গুড়পুকুরের পাড়ে। এ কারণে তা গুড়পুকুরের মেলা নামে পরিচিতি পায়। দেড় দশক আগেও উৎসবমুখর পরিবেশে গুড়পুকুরের মেলা চলত সাতক্ষীরায়। তখন শহরের সদর হাসপাতাল মোড় থেকে শহরতলির বাকাল পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এ মেলা আয়োজন করা হতো।

২০০২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মেলা চলাকালীন একটি সার্কাসে ও সাতক্ষীরার রকসি সিনেমা হলে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হয় তিনজন। এ ঘটনার পর মেলায় দর্শনার্থীর আগমনে অনেকটা ভাটা পড়ে।

জেবি/