মেটিকুলাস ডিজাইনের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সমন্বয়কদের মাধ্যমে কিলিং এজেন্ট নিয়োগ করে গণহত্যা চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এই গণহত্যাকারীদের বিচারের জন্যই তাঁকে আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন শেখ হাসিনা। তিনি রবিবার ফ্রান্স আওয়ামী লীগের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন।

গত জুলাই ও আগস্টে আন্দােলনের সময়ে হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, বিশেষ স্নাইপার রাইফেল ও গুলি কে জোগাড় করে দিয়েছে? গুলি তো ইউনূসই জোগাড় করে দিয়েছে। তারজন্য যখনই ব্রিগেডিয়ার শওকত বললো এগুলোর তদন্ত করতে হবে তখনই তাকে সরিয়ে দিল। এর মধ্যে দিয়ে প্রমাণ হলো হত্যার জন্য সে (ইউনূস) দায়ী। কাজেই গণহত্যা শেখ হাসিনা করে নাই। গণহত্যা ইউনূস তার মেটিকুলাসলি ডিজাইনের মাধ্যমে মাস্টারমাইন্ডের দ্বারা এবং সমন্বয়কদের দ্বারা কিলিং এজেন্ট নিয়োগ করে এই গণহত্যা চালিয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রায় হাজারের উপরে নেতাকর্মীদের হত্যা, দুই-তিন হাজার পুলিশ হত্যা, সংখ্যালঘুদের হত্যা, এই হত্যাগুলো তারাই ঘটিয়েছে।

চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'আল্লাহ যদি আমাদের দিন দেয় প্রতিটি লাশের পোস্টমর্টেম করে প্রকৃত খুনি কারা আমরা তাদের বিচার করব। মিথ্যা অপবাদ দিলে আমরা তা মেনে নিই না। আমি কোনো লাশ ফেলতে চাইনি। তারা দাবি করে আমাকে সরে যেতে হবে। আমি যদি শক্তি প্রয়োগ করতাম তাহলে আমরা থাকতে পারতাম ক্ষমতায়। আমরা লাশের উপরে লাশ ফেলে ক্ষমতায় থাকতে চাইনি।'

শেখ হাসিনা বলেন, আমাকে যে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, মাত্র ২০-২৫ মিনিটের জন্য আমি বেঁচে গিয়েছিলাম। আমি বিশ্বাস করি, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, সরাসরি গুলি, বোমা এমনকি ১৫ আগস্টে যেহেতু বেঁচে গেছি, আল্লাহর নিশ্চয়ই কোনো ইচ্ছা আছে। জনগণের দোয়া এবং আল্লাহর সহায়তায় আমি বেঁচে গেছি। আজকে যেসব যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি দিয়েছি, খুনিদের শাস্তি দিয়েছি তাদেরই দোসর ওই স্বাধীনতা বিরোধীরা ক্ষমতায় বসে যেন জাতির সামনে আসল চেহারাগুলি ভেসে উঠে। গরীবের রক্ত চুষে খেয়ে, আন্তর্জাতিক লবিং করে মানুষের সামনে যারা সাধু সেজে ছিল তাদের আসল চেহারা জাতির সামনে এখন ফুঁটে উঠেছে। এই আসল চেহারাগুলি চিহ্নিত করা এবং আগামীতে যেন তাদের শাস্তি দিতে পারি সেজন্যই আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে, এটা আমি বিশ্বাস করি।

আওয়ামী লীগের প্রবাসী নেতাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল, মানুষ হত্যার জন্য ওই ইউনূস, সমন্বয়ক, জামাত শিবির এবং জঙ্গী এদের বিচার বাংলার মাটিতে আবার হবেই হবে। আমার সেই বিশ্বাস আছে। আপনারাও সেভাবে জনমত তৈরি করেন, মানুষের পাশে দাঁড়ান এবং সব ধরনের সহযোগিতা করেন। আন্তর্জাতিকভাবে ইউনূসের দুর্নীতি গণহত্যা করা এগুলো তুলে ধরেন।

নিজের বিরুদ্ধে আড়াইশ হত্যা মামলাকে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন,  'আমি যাদের হত্যা করেছি তাদেরকে শহীদ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। এদের মধ্যে ৩৫ জন আবার জীবন্ত হয়ে ফিরে এসেছে। ভাত রান্না হলো কিনা একটা ভাত টিপলেই তো সব ভাতের অবস্থা বোঝা যায়। জীবন্ত হয়ে হয়ে যে ফিরে এসেছে সেই ঘটনাই তো প্রমাণ করে আমার বিরুদ্ধে মামলাগুলো যে সব ভূয়া, মিথ্যা মামলা।'

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশ আবার মুক্ত হবে, দেশের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাবে।